“Virat Kohli” বিরাট কোহলি তাঁর শরীরকে এমনভাবে গড়ে তুলেছেন যে তিনি সহজে ইনজুরিতে পড়েন না। বছরে দু-একবার ইনজুরিতে পড়লেও কোহলি ফিরে আসতে বেশি সময় নেন না। ৩৬ বছর বয়সেও ২৪ বছরের যুবকের মতো তাঁর ক্ষিপ্রতা। সিঙ্গেল আর ডাবল রান নেওয়ার সময় কোহলির চিতার মতো গতি সবাইকে অবাক করে। কোহলির ওপর প্রান্তের ব্যাটসম্যান যেই হোক না কেন, দৌড়ে কোহলির সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে আইডল মানা কোহলি হয়ে উঠেছেন ক্রিকেটের ক্রিস্টিয়ানো। সুঠাম দেহের কোহলি বলিউডের কমার্শিয়াল সিনেমার কোনো নায়কের চেয়ে কম নন।এক সময়ের গাল ফোলা এই তরুণ এখন অনেক ক্রিকেটারের ‘ফিটনেস ইন্সপিরেশন’।
কিন্তু কোনো জাদুবলে কোহলি এই ফিটনেস পাননি। ফিট থাকতে কিং কোহলি কী কী করেন, তা জেনে নেওয়া যাক।
কোহলির ফিটনেসের মূল রহস্য নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। নিয়মিত জিম করলে শরীর একটা শেইপে আসে,তবে শক্তির জন্য চাই আদর্শ খাদ্যাভ্যাস। তিনি কখনোই এমন কিছু খান না, যেটা তাঁর মাঠের খেলায় বাজে প্রভাব ফেলবে;সে খাবার যতই লোভনীয়ই হোক। সকালে নাশতা সারেন সেদ্ধ ডিম আর ব্রেড অমলেট দিয়ে, সঙ্গে থাকে পালংশাক, গোলমরিচ আর পনির সালাদ। কোহলি দুপুরে খান বাদাম, লাল আটার রুটি আর মিষ্টি, সঙ্গে প্রোটিন শেক। তাঁর খাবার তালিকা এমনভাবে সাজানো, এতে তাঁর শরীর প্রয়োজনীয় সব খাদ্য উপাদান প্রয়োজন মাফিক পায়। তাঁর রাতের খাবার থাকে একদম সাধারণ। রুটি, ডাল আর সবুজ পাতাবহল সবজি। এসবের পাশাপাশি অনুশীলনের পরে বিরাট প্রোটিন শেক, সয়াদুধ ও বাটার পনির খান। শরীর হাইড্রেটেড রাখতে বিরাট পান করেন ব্ল্যাক ওয়াটার। এটা খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ, আর থাকে উচ্চমাত্রায় অ্যালকালাইন। ফলে এই পানি পানে বেশ কিছু শরীরিক উপকার পাওয়া যায়। এই পানি ক্ষতিকর পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেয়, বিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তবে এই পানির দাম অনেক বেশি, প্রতি লিটার ৩-৪ হাজার রুপি। স্পেশাল খাবার গ্রহণের পাশাপাশি কোহলি তাঁর খাদ্যতালিকা থেকে কিছু খাবার বাদও দিয়েছেন।
“Virat Kohli” কয়েক বছর আগেও তিনি বাটার চিকেন আর মটন রোল খেতে ভালোবাসতেন
কিন্তু সেসব এখন অতীত।পাঞ্জাবিদের সবচেয়ে পছন্দের রুটি, বিরাট সেটিও এড়িয়ে চলেন। কারণ, এই রুটি ওজন বাড়িয়ে দেয়। কফি খান তবে চিনি ছাড়া। তাই চিনির স্বাদ তিনি প্রায় ভুলতে বসেছেন। দুগ্ধজাত খাবারও এড়িয়ে চলেন।
“Virat Kohli” এবার জানা যাক কোহলির শরীরচর্চার নিয়ম।
বিরাট মূলত এমন সব ব্যায়াম করেন, যেগুলোতে পায়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। সেইসঙ্গে পায়ের পেশীও থাকে টানটান। এর ফলে হাঁটা বা দৌড়ানো সহজ হয়। আমাদের শরীরের ভার বহন করে আমাদের দুই পা, তাই পায়ের জোর বেশি থাকলে তার প্রভাব পড়ে শরীরে। বিরাট কোহলি উরুর চর্বি বার্ন হয় এমন শরীরচর্চাও করে থাকেন। তিনি ওয়েটলিফটিংও করেন, হাতের শক্তির জন্য এটি জরুরি। তিনি হাত, কাঁধ, বুক, পিঠকে শক্তিশালী করতে পুশআপ করেন। সেইসঙ্গে তিনি সিক্স – প্যাক অ্যাবস পেতে ক্রাঞ্চ, সিট-আপও করেন। ৫-১০ মিনিটের জন্য মাঝারি ক্রাঞ্চ ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। এতে শরীরের নমনীয়তাও বজায় থাকে। জিমে ওয়ার্কআউট করার পাশাপাশি বিরাটের আরেকটি পছন্দের কাজ হলো সাঁতার কাটা। তিনি নিজের ওজন ঠিক রাখতে নিয়মিত সাঁতার কাটেন। পানিতে কিছুটা রিল্যাক্স হওয়া এবং ফিট থাকার জন্য সাঁতার তাঁর খুব প্রিয়। পেটের মেদ কমাতেও সাঁতার ভালো কাজ করে।
এটি পেশীকে শক্তিশালী করতে এবং শরীরকে সঠিক আকার দিতে কাজ করে।
উপমহাদেশের ক্রিকেটাররা আগে স্বাস্থ্যের প্রতি অতটা মনোযোগী ছিলেন না। কিন্তু এখন দিন বদলেছে, এই বদলের শুরুটা হয়েছে ভারতীয় ড্রেসিংরুম থেকে। বলতে গেলে বিরাট কোহলি এই পরিবর্তনটা এনেছেন। কোহলির ফর্ম নিয়ে মাঝে মধ্যে কথা উঠেছে।
তবে তাঁর ফিটনেস নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। সেই সুযোগ তিনি দেননি। যাই হয়ে যাক, বিরাটের ডায়েটের নড়চড় হয় না। তাই বিরাট কোহলি থেকে তিনি আজ কিং কোহলি।